চট্টগ্রামের হাটহাজারিস্থ আঞ্চলিক কৃষি গবেষনা কেন্দ্রে বিধ্বংসী ফল আর্মিওয়ার্ম পোকার আক্রমণ ও প্রতিকার সংক্রান্ত সচেতনতামূলক এক কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এনএটিপি-২ প্রকল্পের অর্থায়নে অনুষ্ঠিত কর্মশালায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কৃষি মন্ত্রণালয়ের গবেষণা অনুবিভাগের অতিরিক্ত সচিব জনাব কমলারঞ্জন দাশ। বাংলাদেশ গম ও ভূট্টা গবেষণা ইনস্টিটিউট এর মহাপরিচালক ড. নরেশ চন্দ্র দেব বর্মা এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর এর মহাপরিচালক কৃষিবিদ মীর নূরুল আলম। অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর এর উদ্ভিদ সংরক্ষণ উইং এর পরিচালক কৃষিবিদ চন্ডী দাস কুন্ডু। কর্মশালায় ফল আর্মিওয়ার্ম এর ক্ষতির ধরন, লক্ষণ ও বর্তমান করনীয় সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেন বিশিষ্ট কীটতত্ত্ববিদ ড. সৈয়দ নুরুল আলম।
কর্মশালায় জানানো হয় ফল আর্মিওয়ার্ম বিশ্বব্যাপী একটি মারাত্মক বিধ্বংসী পোকা হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। এটি মূলত আমেরিকা মহাদেশের পোকা। ২০১৬ সালে আফ্রিকা এবং ২০১৮ সনে দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশে বিশেষত ভারত, শ্রীলংকায় এদের আক্রমণ পরিলক্ষিত হয়। ২০১৮ সনের নভেম্বরে দেশের উত্তর ও পশ্চিমাঞ্চলের কয়েকটি জেলায় এর উপস্থিতি প্রথমবারের মত রেকর্ড করা হয়। এটি ভূট্টা, সরগম, তুলা, বাদাম, তামাক, বিভিন্ন ধরনের ফল ও সবজিসহ প্রায় ৮০ টি ফসলে আক্রমণ করে থাকে। তবে ভূট্টা ফসলে এর আক্রমণের হার সর্বাধিক। পোকাটি কীড়া অবস্থায় গাছের পাতা ও ফল খেয়ে থাকে। কীড়া পূর্ণাঙ্গ হওয়ার আগে এটি রাক্ষুসে হয়ে উঠে এবং ফসলের ব্যাপক ক্ষতি করে। পোকাটি বিভিন্ন উদ্ভিদ ও উদ্ভিদ জাত উপাদান যেমন চারা, কলম, কন্দ, চারা সংলগ্ন মাটির মাধ্যমে বিস্তার লাভ করে। পূর্ণাঙ্গ পোকা বাতাসের সাথে কয়েকশত কিলোমিটার পর্যন্ত উড়ে গিয়ে বিস্তার লাভ করতে পারে।
কর্মশালায় প্রধান অতিথি অতিরিক্ত সচিব জনাব কমলারঞ্জন দাশ মহোদয় তাঁর বক্তব্যে এ পোকার ক্ষতির হাত থেকে ফসলকে রক্ষার জন্য সকলের সম্বন্বিত প্রচেষ্টার উপর গূরুত্ব আরোপ করেন। বিশেষ অতিথির বক্তব্যে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর এর মহাপরিচালক কৃষিবিদ মীর নূরুল আলম মহোদয় নতুন এ পোকার উপর নিবিড় গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনার পাশাপাশি গবেষণা লদ্ধ জ্ঞান দ্রুত সম্প্রসারণের উপর গূরুত্ব আরোপ করেন। একই সাথে এ পোকা দমনের জন্য প্রয়োজনীয় কার্যক্রম হাতে নেওয়ার জন্য উপস্থিত সকলকে অনুরোধ করেন।
কর্মশালায় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর এর চট্টগ্রাম, কুমিল্লা ও পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলের আওতাধীন অঞ্চল, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের কর্মকর্তা ছাড়াও কৃষি মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন বিভিন্ন দপ্তরের শতাধিক কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন।